সার্ভার খোলে টাকা দিলে উপজেলা নির্বাচন অফিসের
মোঃহালিম শেখ(স্টাফ রিপোর্টার)রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে সেবা প্রদান করেন বলে একাধিক অভিযোগকারী জানিয়েছেন।
ঘুষের টাকা না দিলে নির্বাচন অফিসের সার্ভার বন্ধ আছে, এখন কাজ হবে না, সার্ভার খুললে জানানো হবে বলে টালবাহানা করার কথা জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগী এক সেবা গ্রহীতা ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি তারাগঞ্জ উপজেলার একজন স্থায়ী বাসিন্দা। আমি ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করি। জন্ম নিবন্ধনের কাগজ দিয়ে সেখানে চাকরী পেয়েছি। কিন্তু বর্তমানে চাকরীটি ধরে রাখতে আমার জাতীয় পরিচয় পত্র জরুরী প্রয়োজন।
তাই আমি তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ও আমার নামে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য আবেদন করি। আবেদন করার পর থেকে জমাকৃত বিভিন্ন কাগজের ত্রুটি বের করে সেগুলো সংশোধন করে নিয়ে আসার অজুহাত দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন অফিসে আমি আবারও যাই আমার এনআইডি কার্ডের খোঁজ খবর নিতে। আমাকে নির্বাচন অফিসার প্রথমে বলেন, সার্ভার কয়েকদিন ধরে বন্ধ আছে। মনে হয় জাতীয় নির্বাচনের আগে তোমার কাজটি হবে না।
কিন্তু কার্ডটি বা কার্ডের টোকেনটি জরুরী প্রয়োজনের কথা বললে তিনি আমার মুঠোফোনটি দেখতে চান। আমি আমার মুঠোফোনটি তার হাতে দিলে তিনি আমার ফোনটি বন্ধ করে তার টেবিলে রেখে আমাকে বলেন, যেহেতু সাভার্র বন্ধ আর এনআইডি কার্ডটি তোমারও জরুরী প্রয়োজন তাহলে তুমি দুই হাজার টাকা দাও তোমার কাজটি আমরা স্পেশালভাবে করে দিচ্ছি।
আমি বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে গিয়ে টাকা নিয়ে এসে ওনাকে দেই। এরপর সেখানে আমার ছবি, আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে আমাকে টোকেনটি দেয় এবং বলে কার্ড তৈরি হলে আমার ফোনে এসএমএস আসবে। সেই সাথে আমাকে আরো বলে, টাকার বিষয়টি যদি বাইরের কাউকে জানাই, তাহলে আমার আইডি কার্ডের সমস্যা করে দেওয়া হবে বলে অভিযোগকারী বলেন।
এমনই অপর একজন ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম সংশোধনের জন্য নির্বাচন অফিসে গেলে তারা আবেদন করতে বলেন। আবেদন করার পর একেক দিন একেক কাগজ চেয়ে আবেদনকারীকে হয়রানি করতে থাকেন। হয়রানির এক পর্যায়ে অফিসার তার সাথে গোপনে আলোচনার প্রস্তাব দেন।
গোপনে আলোচনায় রাজী না হলে আবেদনকারীর জমাকৃত কাগজের ভুল বের করে সময় ক্ষেপন করে সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি করতে থাকেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিভিন্ন সময় সেবা নিতে আসা একাধিক সেবা গ্রহীতাদের সাথে বলে একই অভিযোগ বারবারই উঠে আসছে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাদ্দাম হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কে অভিযোগ দিয়েছে তাকে আমার কাছে ধরে নিয়ে আসেন। তার আগে আমি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য দিতে পারবো না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রুবেল রানা বলেন, আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি। এখনো এবিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।