রাজারহাটে অটোরিকশা চালিয়ে ৪ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন রুমা পারভিন ।
মোবাশ্বের নেছারী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : ক্ষুধা ও দারিদ্র্যতায় ডিভোর্সী রুমা পারভিন পিত্রালয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে চলার সাহসীকতা অনেককে অবাক করে দিয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ভারায় চালিত অটোরিকসা চাালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন রুমা (২২) নামের এক তরুণী। কুড়িগ্রামে এই প্রথম একজন তরুণীকে অটোচালক হিসেবে দেখে অবাক সকলে। এলাকায় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন। আবার অনেকেই রুমাকে কাজ করার সাহস যোগাচ্ছেন।
অনেকে কৌতুহল বশত যাত্রী হয়ে তার রিকসায় উঠে পড়েন। আর যাত্রীদের সম্মান করে পৌচ্ছে দিচ্ছেন গন্তব্য স্থানে। ওই নারী অটোচালক স্বাচ্ছন্দেই যাত্রী পরিবহন করছেন উপজেলার আনাচে-কানাচে। এভাবেই রোজগার করছেন প্রতিদিন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে আর অটো চালান না রুমা।
২৬ ফেব্রুয়ারি রুমা পারভীন বলেন, রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের সামকালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও পারভীন বেগম দম্পতির মেয়ে রুমা পারভিন। তার বড় দুই ভাই বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। ছোট ভাই বাবা ও মাকে নিয়ে রুমার সংসার।
২০১৮ সালে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়েছিল। দুই বছর যেতে না যেতেই স্বামী তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে,বাবার ঘরে ফিরে আসেতে হয়েছে রুমাকে। তিনি বলেন, বাবা মায়ের সংসারে বোঝা না হয়ে কিছু করার চিন্তা মাথায় আসে তার। এক পর্যায়ে অটোরিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। কিন্তু অর্থাভাবে একজনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছি অটোরিকশা। প্রতিদিন তার আয় ৩০০/৪০০ টাকা থেকে মালিককে ভাড়া বাবদ দিতে হয় দিনে ১৫০ টাকা।
রুমার স্বপ্ন একদিন নিজের টাকায় অটো রিকশা কিনবেন। অটো রিকশা চালাতে গিয়ে প্রথম দিকে সংকোচ লাগলেও ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আর সংকোচ লাগেনা। ব্যাটারি চালিত অটো চালিয়ে সংসার চলছে এটাই বাস্তবতা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম বলেন, শুনে মনে হচ্ছে মেয়েটি সাহসী। মা-বাবার বোঝা না হয়ে সে সংসারের হাল ধরেছেন। শুধু অটো চালানো সমাধান হতে পারে না ভবিষ্যতে সরকারিভাবে ড্রাইভিং শিখতে চাইলে তাকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। যেন সারা জীবনের জন্য স্থায়ীভাবে কিছু একটা করতে পারেন রুমা পারভীন।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অদম্য, সৎসাহসী রুমা পারভিন হতে পারে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।