রংপুরে হিমাগার কর্তৃপক্ষ চাষিদের পেছনে ছুটেও আলু পাচ্ছে না
রিপোর্টারঃ জীবন চন্দ্র রায়
প্রতিবছর সংরক্ষণের জন্য আলু রাখতে চাষিরা ধরনা দিতেন হিমাগারে। কিন্তু এবার হিমাগার কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে সুবিধা দেওয়ার কথা বলেও চাষিদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না।
এ অবস্থায় আলুর অভাবে হিমাগারগুলোর অনেকাংশ খালি পড়ে থাকার আশঙ্কায় হিমাগারমালিকেরা। রংপুরের বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলার ছয়টি হিমাগারে খোঁজ নিয়ে ওই চিত্র পাওয়া গেছে।
কৃষকেরা বলছেন, গত মৌসুমে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করে অনেক কৃষককে লোকসান গুনতে হয়েছে।
তার ওপর এবার হিমাগারের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে খেত থেকে আলু বিক্রি করে চাষিরা লাভ পাওয়ায় হিমাগারে আলু সংরক্ষণে অনীহা দেখাচ্ছেন। তবে চলতি মৌসুমে ওই দুই উপজেলায় আলুর আবাদও কমেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে বদরগঞ্জে ৩ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছিল। এবার চাষ হয়েছে ২ হাজার ৬৭৫ হেক্টরে। তারাগঞ্জে গত মৌসুমে ৩ হাজার ৩২০ এবং এবার ৩ হাজার ১০৫ হেক্টরে আলুর চাষ হয়েছে।
দুই উপজেলায় গত মৌসুমের চেয়ে এবার আলুর আবাদ কমেছে ৭৮৫ হেক্টরে। উপজেলা দুটিতে হিমাগার রয়েছে ছয়টি। ধারণক্ষমতা ৮ লাখ ৪৫ হাজার বস্তা।
দুই উপজেলার অন্তত ৮ জন ব্যবসায়ী ও ১৫ জন আলুচাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে খেত থেকে উফশী জাতের আলু প্রতি কেজি গড়ে ১২ টাকায় ও স্থানীয় জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকায়।
এতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও চাষিরা মুনাফা পাচ্ছেন। ঝুটঝামেলা এড়াতে খেত থেকে তাঁরা আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন।
গত মৌসুমে আলু হিমাগারে রেখে লোকসান গুনেছেন তারাগঞ্জের মেনানগর গ্রামের আলুচাষি আজহারুল ইসলাম। এবার আলু তুলে খেত থেকেই তিনি বিক্রি করে দিচ্ছেন। জানতে চাইলে আজহারুল বলেন, ‘হামাক কি পাগলা পাইছেন!
গতবার আলু তুলিয়া স্টোরোত (হিমাগারে) থুইয়া ভাড়ার টাকাও ওঠে নাই। এবার ভুঁইয়ের আলু ভুঁইয়োতে বেচাওচি। খরচ বাদে মণে (৪০ কেজি) লাভ হওচে ৮০ থাকি ৯০ টাকা। মুই বাঁচি থাকতে স্টোরোত আলু থুবার নেও।’