জাপানি মায়ের আপিল হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে

দুই কন্যা শিশুকে নিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন শিশুদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো।

 

রোববার (০৫ ডিসেম্বর) সকালে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করা হয়।

 

এর আগে গত ২১ নভেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই শিশুকে বাবার কাষ্টরিতে রাখার আদেশ দেন। রায়ে আদালত বলেন, ‘যেহেতু মা জাপানি নাগরিক, সেখানে তার বসবাস ও কর্মস্থল সে কারণে তিনি তার সুবিধামত সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশুদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। এক্ষেত্রে বছরে তিন বার বাংলাদেশে তার যাওয়া আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ শিশু দুটির বাবাকে বহন করত হবে।

 

জাপানের নাগরিক নাকানো এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। ঢাকা এসে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। মেয়ে দু’টির বাবা বাংলাদেশি শরীফ ইমরানের কাছ থেকে সন্তানদের নিজের জিম্মায় পাওয়ার আবেদন করেন তিনি।

 

চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। গত ২১ জানুয়ারি ইমরান টোকিওর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার এক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। তবে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের আবেদন নাকচ করে।

 

পরবর্তী সময়ে স্কুলবাসে করে বাসায় ফেরার পথে বাসস্টপেজ থেকে ইমরান বড় দুই মেয়েকে (১১ ও ১০) অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। গত ২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন।

 

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।

 

গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে বড় দুই মেয়ের জিম্মা হস্তান্তরের আদেশ দেন। এরপর করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এতোদিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি। ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো।

 

এরিকোর আইনজীবী দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো (৪৬) ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) জাপানি আইন অনুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে তারা তিনটি কন্যা সন্তানের রয়েছে। তারা হলো— জেসমিন মালিকা (১১), লাইলা লিনা (১০) ও সানিয়া হেনা (৭)। /

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *