গাজীপুরে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগে মানববন্ধন
আব্দুস সালাম রানা, নির্বাহী সম্পাদক: শীর্ষ নিউজ ২৪ ডটকম.
গাজীপুরের শ্রীপুরে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে হত্যার অভিযোগ এনে মানববন্ধন করে বিচার দাবি করেছে নিহতের বাবা, তার প্রাক্তন সহপাঠি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বেলা ১১টায় শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদিঘী বাজারে উক্ত মানববন্ধনের আয়োজন করে তারা।
নিহত মাহফুজ ফরাজি (১৭) শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদিঘী গ্রামের ফজলুল হক ফরাজির ছেলে। সে স্থানীয় প্লেজ হার্বার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ও লেভেল শেষ করে স্কলারশিপ নিয়ে কানাডা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
মানববন্ধনে নিহতের বাবা অভিযোগ করেন, একই উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে ইশতিয়াক আহমেদ তৌফিক তার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
নিহতের বাবা ফজলুল হক ফরাজি জানান, সোমবার (১৫ মে) মাহফুজ রাতের খাবার শেষে ঘরে বসেছিল। একটি প্রাইভেটকারে তৌফিকসহ তার দুইসহযোগী প্রাইভেটকার নিয়ে বাড়ির গেটে এসে হর্ন দেয়। আমার গাড়ি চালক গাড়ির হর্ন শুনে গেইটে গিয়ে জিজ্ঞিাসা করলে তৌফিকসহ তার সাথে থাকা দুই বন্ধু মাহফুজকে বাড়ির বাইরে আসতে বলে। কিছু সময় পর মাহফুজ সবার অগোচরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষন পর মাহফুজকে ফোন দিলে সে তাদের সাথে মাওনা চৌরাস্তায় আছে বলে জানায়। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মাহফুজের মোবাইল ফোন থেকে দুর্ঘটনা সম্পর্কে তার মাকে জানায়।
পরে তারা ঘটনাস্থল রাজেন্দ্রপুরে গিয়ে কাউকে খুঁজে পায়নি। মাহফুজকে গুরুতর আহতাবস্থায় মাওনা চৌরাস্তার আল হেরা হাসপাতালে রয়েছে বলে জানতে পারি। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্বজনরা মাহফুজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে স্বজনরা মাহফুজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর শ্রীপুর থানা পুলিশ তার ছেলেকে হত্যার ঘটনায় আইনগত কোন ধরনের সহযোগিতা পাননি। তিনি পুলিশের ভুমিকা নিয়েও মানববন্ধনে অভিযোগ করেন।
মানববন্ধনে নিহতের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সিংগারদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। তারা এবং তাদের কেউ যদি হত্যা করে থাকে তাহলে পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন, নিহতের ফজলুল হক ফরাজি, মা রুমানা আক্তারসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অভিযুক্ত তৌফিকের বাবা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমার ছেলেও ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনাকে তারা হত্যা বলে প্রচার করছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন আসলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। যদি আমার ছেলে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে থাকে বাবা হিসেবে আমিও ছেলের বিচার দাবি করছি।
পুলিশের বিুরদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফজল মো. নাসিম বলেন, দুর্ঘটনার ঘটনাস্থল জিএমপি’র সদর থানার রাজেন্দ্রপুর এলাকায়। আইন অনুযায়ী যেখানে ঘটনা সংশ্লিষ্ট থানা এ বিষয়ে তদন্তসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।