সত্যিকারের বাসযোগ্য শহর এখন ঢাকা
শীর্ষ নিউজ টুয়েন্টিফোর নিউজ ডেস্ক :
ঈদের আনন্দ ভাগ করতে বুধবার থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করে মানুষ। মাত্র ২/১ দিনের ব্যবধানে পাল্টে গেছে শহরের চিরচেনা চিত্র। নেই ট্রাফিক সিগন্যাল। মোড়ে মোড়ে গাড়ির জট নেই। রাজধানী ঢাকা এখন তাই ফাঁকা। যারা এখনো রাজধানীতে আছেন, তারা স্বস্তিতে ঘুরছেন এই শহরে।
রোববার (১লা মে) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন ঈদে ছুটি কাটাতে গত ৪ দিনে ঢাকা ছেড়েছেন কমপক্ষে ৮০ লাখ মানুষ। এই তথ্যই বলে দেয় ঢাকা শহর এখন কত মানুষের বোঝা থেকে মুক্ত।
রাজধানীর মহাসড়ক গুলোতে চোখ দিলেই উপরের তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। যে ঢাকার নিত্যসঙ্গি যানজট। এখন সেই শহর অনেকটাই ফাকা। যে রাস্তায় রিক্সার টু টাং আর গাড়ির অসহ্য হর্ণের যন্ত্রণায় কান ঝালাফালা হয় সেখানে নেই কোলাহল। নেই যানজটও। তাই ১ ঘণ্টার পথ যেতে সময় লাগছে মাত্র ১০ মিনিট। এ যেন এক নতুন ঢাকা।
সরেজমিনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে নেই কর্মব্যস্ততা। শাহবাগ, ফার্মগেইট, পল্টন, সচিবালয়, কাকরাইল, মৎস্যভবন বা হাইকোর্ট কোথায়ও নেই যানজট।
গণ-পরিবহনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় রাস্তা দখলে নিয়েছে সিএনজি ও রিকশা। শেষ মুহূর্তে বাড়ি যাচ্ছেন যারা তাদের গন্তব্য বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট বা রেলওয়ে স্টেশনের দিকে।
শাহবাগ, ফার্মগেট, মানিকমিয়া অ্যাভিনিউ, গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, কাওরান বাজার, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও ট্র্যাফিক সিগনালের প্রয়োজন হচ্ছে না। রাস্তার যে পাশে যখন গাড়ি বেশি, তখন তারা নিজেরাই একপাশ থেকে অন্য পাশে যাচ্ছেন। গাড়ির সংখ্যা কম। ট্র্যাফিক পুলিশ বক্সে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।
কোথাও কোথাও রিকশার দৌরাত্ম্য দেখা গেছে। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেল চলতে দেখা গেছে। তবে গাবতলী, সদরঘাট এবং মহাখালীর দিকে গাড়ির হালকা চাপ রয়েছে।
মূলত বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল থেকেই মানুষের ও গাড়ির চাপ কমতে থাকে। ওইদিন ঈদের আগে সরকারি প্রতিষ্ঠানে শেষ কর্মদিবস ছিল। ঈদের আগে ২৯ এপ্রিল ছিল শুক্রবার। পরদিন শনিবার ৩০ এপ্রিল। আজ ১ মে রোববার শ্রমিক দিবসের সরকারি ছুটি। একই সঙ্গে ঈদের ছুটিও শুরু হচ্ছে। এরপর সোম ও মঙ্গলবার ঈদের ছুটি। তবে রোজা যদি ৩০টি হয়, সেক্ষেত্রে বুধবারও (৪ মে) ঈদের সরকারি ছুটি থাকবে। ফলে টানা ছয় দিন ছুটি পাচ্ছেন চাকরিজীবীরা।
ট্র্যাফিক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মূলত বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস হওয়াতে শুক্রবার শহরে একেবারেই যানজট ছিল না। যতটুকু ছিল সেটা মার্কেট এলাকায়। কেননা মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করছেন বলে ঐ এলাকায় একটু জট ছিল।
অনেকেই বলছেন রাজধানী ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা সম্ভব হলে দারুন বাসযোগ্য শহর হতো এটি। কমতো শব্দ ও বায়ুদূষণ। মানুষ বেচে যেত যানজট নামক যন্ত্রণা থেকে। রক্ষা পেত নাগরিকদের কর্মঘণ্টা।
নিয়মিত আপডেট পেতে
শীর্ষ নিউজ ২৪ এর সঙ্গে থাকুন।