উলিপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, উলিপুরঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক সেনা সদস্যকে মারপিট ও পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগে নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার আটদিন পর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে মঙ্গলবার (১ মার্চ) পর্যন্ত ওই চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা আটক হননি। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার ঘটনায় ওই ইউনিয়নের সবত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দড়িকিশোরপুর এলাকার সেকেন্দার আলীর সাথে পার্শ্ববর্তী মজির উদ্দিনের ছেলে আতাউর রহমান আতার দীর্ঘদিন থেকে একটি দোকান ঘর নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে দোকানঘর ভাংচুর ও সেকেন্দার আলীকে মারপিট করলে তিনি আতা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সম্প্রতি চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় আতাউর রহমান আতা। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলীকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপসৃষ্টিসহ পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিলেন।
আরো জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী সেকেন্দার আলীর ছেলে সেনা সদস্য সালাহ উদ্দিন ১০ দিনের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। পরদিন (১৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে সেনা সদস্য তাদের দোকান ঘরের সামনে গেলে চেয়ারম্যান তাকে সেখানে দেখতে পেয়ে মারপিট ও খুন করার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওই সেনা সদস্য ১৯ ফেব্রুয়ারী উলিপুর থানায় জিডি করেন। জিডির বিষয়টি চেয়ারম্যান জানতে পেয়ে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারী দুপুরে ওই ইউনিয়নের থেতরাই পাকার মাথা নামকস্থানে সেনা সদস্য সালাহ উদ্দিনকে দেখতে পেয়ে চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে করা পূর্বের মামলা তুলে নিতে বলেন এবং না হলে মামলার খরচ বাবদ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন।
এ সময় ওই সেনা সদস্য চাঁদা দিতে অস্বীকার করে ঘটনার প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন সেনা সদস্যকে জোর করে অপহরন করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানে কক্ষে নিয়ে মারপিট করে গুরুত্বর আহত করেন। পরে সেনা সদস্যকে রক্ষা করার জন্য তার পিতা সেকেন্দার আলী ও মাতা শাহানাজ পারভীন এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারপিট করে চেয়ারম্যান এবং তার লোকজন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করেন। ঘটনার আটদিন পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারপিট ও চাঁদাদাবীর অভিযোগে ওই সেনা সদস্যের মামলা নেন থানা পুলিশ। মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আতাসহ নামীয় ১৩ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০-১২জনকে আসামী করা হয়। (উলিপুর থানার মামলা নং-৩২)।
থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা জানান, ঘটনার দিন আমি উপস্থিত ছিলাম না। তারপরেও আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হওয়া দুঃখজনক। আমরা উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতি ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারপিটসহ চাঁদা দাবীর অভিযোগে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার আটদিন পর মামলা রুজু করার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই সেনা সদস্যের চিকিৎসাসহ তার উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের অনুমতি গ্রহন করার পর তিনি মামলা দায়ের করেছেন। এ কারনে বিলম্ব হয়েছে। ##
ফয়জার রহমান রানু
উলিপুর,কুড়িগ্রাম।