শীর্ষ নিউজ টুয়েন্টিফোর নিউজ ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এর প্রথম প্রহরে মানুষের ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। হাজারও মানুষের এই ঢল দুপুর পর্যন্ত দেখা গেছে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল হাতে দলে দলে মানুষ এসে হাজির হয়েছেন শহীদ বেদীতে।
শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা অনেকের হাতেই ফুল ও প্লেকার্ড শোভা পায়। অনেকে কালো পোশাক পরে হাজির হয়েছেন বায়ান্নর ভাষা শহীদদের স্মৃতির বেদিতে।
এবারও শহীদ মিনারে আসা সবাইকে মানতে হচ্ছে মহামারিকালের বিশেষ সতর্কতা। মাস্ক পরা এবং নির্দিষ্ট রুটম্যাপ অনুসরণ করতে দেখা গেছে সবাইকে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচ এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজন করে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। তবে শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতেই এসব কড়াকড়ি মানা হলেও সর্বসাধারণের উপচেপড়া ভিড়ে পরে তা অনেকটাই ঢিলেঢালা হয়ে যেতে দেখা যায়।
প্রথম প্রহরে ফুল দেওয়ার জন্য ছাত্র-জনতা ব্যানার, পোস্টার, ফুলের তোড়া নিয়ে নির্দেশিত রুটম্যাপ অনুযায়ী পলাশীর মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সর্বসাধারণের জন্য শহীদ মিনারের মূল ফটক খুলে দিলে দলবদ্ধ ও এককভাবে শহীদ মিনারে প্রবেশ করে তারা।
এর আগে ১২টা ১ মিনিটে অমর একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এসময় বিউগলে বেজে উঠে রক্তে শিহরণ তোলা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবরা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
গত বছরের মতো এবারও কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সশরীরে শহীদ মিনারে আসেননি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
১৯৫২ সালের এ দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করলে ছাত্র-জনতা তা ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে রাজপথে নামে। সেই মিছিলে গুলি চালালে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ বীর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকার রাজপথ। মহান সেই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণেই নির্মিত হয় শহীদ মিনার। প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে এসে শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায় গোটা জাতি।
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অহংকার আর শোকের এই দিনটি পালন করছে জাতি। একুশের প্রথম প্রহরে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাজানো হয়।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসা নাগরিকদের যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।
নিয়মিত আপডেট পেতে
শীর্ষ নিউজ ২৪ এর সঙ্গে থাকুন।